Gulshan Media Blog
Marriage Media for Business Owners in Bangladesh
What is the marriage rate in Bangladesh
October 28, 2025
Are You Mistaking Control for Love?
Discover Second Marriage Girl Profiles with Mobile Numbers
October 28, 2025
abc
How This Platform Helps You Find Your Life Partner
October 26, 2025
 Cross-Cultural Marriages: How Gulshan Media Bridges Families Across Borders
 Cross-Cultural Marriages: How Gulshan Media Bridges Families Across Borders
October 25, 2025
Facebook Twitter Youtube Instagram
Gulshan Media Blog

Type and hit Enter to search

  • Home
  • Blog
  • Features
    • Bangladeshi Matrimony
    • Islamic Matrimony
    • Marriage Media
    • Matrimonial
    • Matrimony
    • Online Ghotok
    • Online Matrimony
    • Online-offline matrimony
    • Wedding Tips
  • Seeking Bride/Groom
    • Bride Available
    • Citizen Bride Available
    • Groom Available
    • Citizen Groom Available
  • Health
  • Life Style
     How Our Personalized Matchmaking Process Ensures Compatibility
    Why Gulshan Media is the No.1 Marriage Agency in Dhaka
    Why Gulshan Media is the No.1 Marriage Agency in Dhaka
     Why High-Profile Families Prefer Gulshan Media for Discreet Matchmaking
     Why High-Profile Families Prefer Gulshan Media for Discreet Matchmaking
    Marriage Guide for Bangladeshis Living in the UK
    Marriage Guide for Bangladeshis Living in the UK
Gulshan Media Blog
  • Home
  • Blog
  • Features
    • Bangladeshi Matrimony
    • Islamic Matrimony
    • Marriage Media
    • Matrimonial
    • Matrimony
    • Online Ghotok
    • Online Matrimony
    • Online-offline matrimony
    • Wedding Tips
  • Seeking Bride/Groom
    • Bride Available
    • Citizen Bride Available
    • Groom Available
    • Citizen Groom Available
  • Health
  • Life Style
     How Our Personalized Matchmaking Process Ensures Compatibility
    Why Gulshan Media is the No.1 Marriage Agency in Dhaka
    Why Gulshan Media is the No.1 Marriage Agency in Dhaka
     Why High-Profile Families Prefer Gulshan Media for Discreet Matchmaking
     Why High-Profile Families Prefer Gulshan Media for Discreet Matchmaking
    Marriage Guide for Bangladeshis Living in the UK
    Marriage Guide for Bangladeshis Living in the UK
💑 What Steps Would a Shy Spouse Take to Start a Relationship?
Bangladeshi Matrimony

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025

Gulshan Media
June 28, 2025 13 Mins Read
100 Views
0 Comments

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025
বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর গুরুত্ব

ভূমিকা:

বৈবাহিক সম্পর্কের নৈতিক ভিত্তি

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত ,  বিবাহ একটি পবিত্র ও সামাজিক চুক্তি, যার মাধ্যমে দুটি মানুষ শুধুমাত্র একে অপরের জীবনসঙ্গী হয় না, বরং একটি নতুন পরিবার গঠনের দায়িত্ব নেয়। এই সম্পর্ক কেবল শরীরের নয়, আত্মার, অনুভবের ও নৈতিকতার বন্ধনও বটে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একটি সুন্দর সমঝোতা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের উপর প্রতিষ্ঠিত। তবে আজকের সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বৈবাহিক সম্পর্কের মূল ভিত্তিগুলো নড়বড়ে হয়ে উঠছে, যার ফলে জন্ম নিচ্ছে অসন্তোষ, দূরত্ব এবং সম্পর্ক ভাঙনের ঘটনা।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে—সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর গুরুত্ব কতটা হওয়া উচিত? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে বৈবাহিক সম্পর্কের নৈতিক ভিত্তির দিকে। এই ভিত্তিগুলোর উপরেই দাঁড়িয়ে থাকে একটি সুস্থ, সুখী ও দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্য জীবন। এখানে আমরা আলোচনা করব সেই নৈতিক ভিত্তিগুলোর ওপর, যা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে একটি সুসংহত, ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে সহায়ক।

১. বিবাহ: একটি চুক্তি নয়, একটি অঙ্গীকার

ধর্মীয় এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ কেবলমাত্র একটি সামাজিক চুক্তি নয়; এটি একটি মহান অঙ্গীকার। ইসলাম ধর্ম মতে, বিবাহ হল একটি মিথাকুন গালীজান—অর্থাৎ একটি দৃঢ় ও গুরুতর চুক্তি। এই চুক্তি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক দায়িত্ব, ভালোবাসা, সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতার সম্পর্ক স্থাপন করে। এ সম্পর্কের ভিত্তি দাঁড়িয়ে থাকে বিশ্বাস ও নৈতিকতার উপর।

একটি পরিবার তখনই সুস্থভাবে গড়ে ওঠে, যখন স্বামী নিজ স্ত্রীকে কেবল গৃহিণী বা সন্তানদের মা হিসেবে দেখে না; বরং একজন পূর্ণাঙ্গ মানব, নিজের জীবনসঙ্গী ও পরামর্শদাতা হিসেবে সম্মান করে। এই সম্মানবোধ দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে।

২. পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তি

শ্রদ্ধা ছাড়া কোনো সম্পর্কই টিকতে পারে না। যখন একজন স্বামী তার স্ত্রীর চিন্তাধারা, মতামত, আবেগ, ভালো-মন্দ বা সীমাবদ্ধতাকে সম্মান করেন, তখন স্ত্রীর মধ্যে এক ধরনের নিরাপত্তা, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসা জন্ম নেয়। পক্ষান্তরে অবহেলা, কটূক্তি বা খাটো করে দেখার মানসিকতা সম্পর্কের ভিতকে দুর্বল করে তোলে।

সমাজে অনেক সময় স্বামীকে গৃহকর্তা হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়, আর স্ত্রীকে একজন সহকারী হিসেবেই গণ্য করা হয়। কিন্তু আধুনিক ও ন্যায়ভিত্তিক বিবাহে দুজনের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামতকে গুরুত্ব দেন, তাহলে তাতে পরস্পরের মধ্যে একটি বোঝাপড়া তৈরি হয়, যা দাম্পত্য জীবনের উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

৩. দায়িত্ববোধ ও দায়িত্ব ভাগাভাগি

বিবাহের মাধ্যমে একজন পুরুষ কেবল একজন স্ত্রীর স্বামী হন না, বরং একজন পরিবারের অভিভাবক, দায়িত্বশীল মানুষ এবং স্ত্রী ও সন্তানের ভবিষ্যতের সহায়কও হয়ে ওঠেন। দাম্পত্য জীবনে দায়িত্ব ভাগাভাগি করার মানসিকতা থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রীর ঘরকন্না করা যেমন দায়িত্ব, তেমনি স্বামীরও উচিত বাইরে কাজের পাশাপাশি সংসারের ভেতরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করা।

বিশেষ করে সন্তান লালন-পালনে স্বামীর সক্রিয় অংশগ্রহণ স্ত্রীকে মানসিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। এই সহযোগিতামূলক মনোভাবের অভাবে অনেক সময় স্ত্রীরা একা হয়ে পড়ে, যা একসময় মানসিক চাপ, ক্লান্তি এবং সম্পর্কের অবনতির দিকে নিয়ে যায়।

৪. ভালোবাসা ও আবেগের প্রকাশ

ভালোবাসা কেবল মনে পুষে রাখলে হয় না, তা প্রকাশ করাও জরুরি। অনেক পুরুষ মনে করে, ভালোবাসা দেখানোটা দুর্বলতার লক্ষণ। কিন্তু বাস্তবে একজন স্ত্রী তার স্বামীর মুখে ‘ভালোবাসি’ কথাটি শুনলে বা ছোটখাটো যত্নশীল আচরণ পেলে অনেক বেশি মানসিকভাবে জড়িত হন। এটি তাদের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ককে দৃঢ় করে।

স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি সংবেদনশীল, আন্তরিক ও স্নেহশীল হন, তাহলে সম্পর্ক হয়ে ওঠে গভীর, মজবুত ও স্থায়ী। এর মাধ্যমে এক ধরনের বন্ধুত্ব তৈরি হয়, যা শুধুমাত্র ভালোবাসার নয়, বরং শ্রদ্ধা, সমঝোতা এবং সহানুভূতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।

৫. ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ: ইসলামে স্ত্রীর মর্যাদা

ইসলাম ধর্মে স্ত্রীর প্রতি সদয় ব্যবহার করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে,

“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম।”

(তিরমিযি, হাদিস: ৩৮৯৫)

এই হাদিসটি স্পষ্ট করে যে একজন মুসলিম পুরুষের উত্তম হওয়ার মানদণ্ড হচ্ছে তার স্ত্রীর প্রতি তার আচরণ। ধর্মীয়ভাবে স্বামী যেমন স্ত্রীর ভরণপোষণ, নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তির দায়িত্ব বহন করেন, তেমনি তাঁকে প্রেম, সম্মান ও উদারতা প্রদর্শন করতেও উৎসাহিত করা হয়েছে।

৬. আধুনিক সমাজে স্ত্রীর গুরুত্ব

বর্তমান যুগে নারীরা শুধু গৃহকর্মে সীমাবদ্ধ নয়, তারা শিক্ষিত, কর্মজীবী এবং সমাজে বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে একজন স্বামীর উচিত, স্ত্রীর যোগ্যতাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তার মতামত ও লক্ষ্যকে সম্মান করা। অনেক স্বামী এখনও স্ত্রীকে কেবল একজন “দায়িত্ব” হিসেবে দেখেন, অথচ তাঁরা বুঝতে চান না, স্ত্রীও একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি যার স্বপ্ন, অভিজ্ঞতা ও চাহিদা আছে।

যখন একজন স্বামী তার স্ত্রীর পেশাগত জীবন, স্বপ্ন এবং সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন, তখন তা কেবল স্ত্রীর নয়, পুরো পরিবারের উন্নয়নে অবদান রাখে।

উপসংহার (এই পর্বের জন্য)

দাম্পত্য সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে হলে শুধুমাত্র ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, বরং নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধা ও সংবেদনশীলতা অপরিহার্য। স্বামী যদি তার স্ত্রীর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব, সম্মান এবং সহানুভূতি প্রদর্শন করেন, তাহলে সেই পরিবারে শান্তি, ভালোবাসা ও একতা বজায় থাকে।

 

এটাই বৈবাহিক সম্পর্কের নৈতিক ভিত্তি—যেখানে একজন মানুষ আরেকজনকে শুধু “অধিকার” হিসেবে না দেখে, বরং একজন পূর্ণাঙ্গ, সম্মানিত ও প্রিয় সঙ্গী হিসেবে দেখে। এই ভিত্তি যতটা মজবুত হবে, ততটাই স্থায়ী হবে দাম্পত্য জীবন।

বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025
বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025

ইসলামে স্ত্রীর মর্যাদা ও স্বামীর দায়িত্ব

অধ্যায় ২: ইসলামে স্ত্রীর মর্যাদা ও স্বামীর দায়িত্ব

ভূমিকা

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে পারিবারিক জীবন, দাম্পত্য সম্পর্ক, নারী-পুরুষের পারস্পরিক অধিকার ও দায়িত্ব—সবই সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ইসলাম ধর্মে শুধুমাত্র বৈবাহিক একটি চুক্তি নয়, বরং একে একটি মহৎ এবং পূর্ণাঙ্গ পারস্পরিক দায়িত্বের সম্পর্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে স্ত্রীর মর্যাদা, অধিকার ও তার প্রতি স্বামীর দায়িত্বের বিষয়ে ইসলামের শিক্ষাগুলো অত্যন্ত স্পষ্ট, ন্যায়ভিত্তিক এবং মানবিক।

 

এই অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব, ইসলামে স্ত্রীর স্থান কোথায়, স্বামীর তার প্রতি কী দায়িত্ব রয়েছে এবং এই দায়িত্ব পালন না করলে ইসলামী দৃষ্টিতে কী পরিণতি হতে পারে।

১. স্ত্রীর মর্যাদা: কুরআন ও হাদিসের আলোকে

কুরআনে বলা হয়েছে:

“তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহিত, তারা যেন তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে। কারণ, যদি কোনো নারীকে তোমরা অপছন্দও কর, তবু হতে পারে, আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রেখেছেন।”

(সূরা আন-নিসা, ৪:১৯)

এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, স্ত্রীর প্রতি সদ্ব্যবহার করা কেবল নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং তা ধর্মীয় নির্দেশ। এমনকি যখন স্ত্রীকে পছন্দ না হয়, তখনও তার প্রতি দয়া ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ বজায় রাখতে বলা হয়েছে।

হাদিসে স্ত্রীর মর্যাদা সম্পর্কে:

“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণ করে।”

(তিরমিযি, হাদিস: ৩৮৯৫)

এই হাদিসে দেখা যায়, একজন পুরুষের উত্তম চরিত্র যাচাই হয় তার স্ত্রীর সঙ্গে আচরণের মাধ্যমে। অর্থাৎ স্ত্রীর প্রতি আচরণ কেবল সামাজিক নয়, বরং ধর্মীয় পরিচয়েরও অংশ।

২. বিবাহের উদ্দেশ্য ও স্ত্রীর প্রতি সম্মান

ইসলামে বিবাহের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে:

মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি অর্জন

সামাজিক বিশৃঙ্খলা রোধ

পরিবার গঠন এবং বংশধারা রক্ষা

এতসব মহান উদ্দেশ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতা, মায়া-মমতা ও সম্মান। একজন স্ত্রী কেবল একজন সহচরী নন, বরং একজন পরিপূর্ণ সঙ্গিনী, যিনি স্বামীর জীবনের পথচলায় অংশীদার হন।

৩. স্বামীর মৌলিক দায়িত্বসমূহ

ক. ভরণপোষণ নিশ্চিত করা

কুরআনে বলা হয়েছে:

“পুরুষেরা নারীদের উপর দায়িত্বশীল, কারণ আল্লাহ তাদের একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তারা তাদের সম্পদ ব্যয় করে।”

(সূরা আন-নিসা, ৪:৩৪)

এই আয়াতের আলোকে বোঝা যায়, একজন স্বামীর মূল দায়িত্ব স্ত্রীর ভরণপোষণ নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে:-খাদ্য, বাসস্থান, বস্ত্র ,চিকিৎসা, নিরাপত্তা

খ. স্ত্রীর নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষা

স্বামী যেন তার স্ত্রীকে পারিবারিক, সামাজিক এবং মানসিকভাবে নিরাপদ রাখেন, তা ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশিত। তাকে এমন পরিবেশ দিতে বলা হয়েছে, যেখানে স্ত্রী তার স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারেন এবং অপমান বা হুমকি ছাড়া বসবাস করতে পারেন।

গ. ভালোবাসা ও সদ্ব্যবহার করা

“তাঁদের (স্ত্রীদের) সাথে সদ্ব্যবহার করো। কেননা, তোমরা যদি কাউকে অপছন্দও কর, হতে পারে আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রেখেছেন।”

(সূরা আন-নিসা, ৪:১৯)

স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি সদয়, সংবেদনশীল এবং প্রেমপূর্ণ হন, তাহলে তা পারিবারিক শান্তির ভিত্তি গড়ে তোলে।

ঘ. স্ত্রীর অধিকার সংরক্ষণ

স্বামীর দায়িত্ব শুধু ভরণপোষণ নয়, বরং স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করাও তার উপর ফরজ। যেমন:

তার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া

তার ব্যক্তিত্ব ও মর্যাদা বজায় রাখা, যৌন অধিকারকে সম্মান করা, স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা

৪. যৌথ দায়িত্ববোধ: একে অপরের পোশাক

কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:

“তোমরা একে অপরের পোশাক”

(সূরা আল-বাকারা, ২:১৮৭)

এখানে ‘পোশাক’ শব্দটি একটি রূপক। পোশাক যেমন শরীরকে আবৃত রাখে, সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমন স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য আবরণ, সৌন্দর্য, আত্মিক প্রশান্তির উৎস ও রক্ষা।

এই দৃষ্টিভঙ্গি বিবাহকে একটি পবিত্র ও পূর্ণাঙ্গ সম্পর্ক হিসেবে উপস্থাপন করে, যেখানে কোনো পক্ষ অন্যকে অবহেলা বা অবজ্ঞা করতে পারে না।

৫. অন্যায় আচরণে সতর্কবার্তা

ইসলামে স্ত্রীদের প্রতি অন্যায় আচরণকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাদিসে রয়েছে:

“আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি সে, যে তার পরিবারের সাথে সদ্ব্যবহার করে।”

(ইবনে মাজাহ)

অপরদিকে, স্ত্রীর প্রতি অন্যায়কারী পুরুষ সম্পর্কে রাসূল (সা.) কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

“স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে যে, কিয়ামতের দিন সে সর্বপ্রথম বিচারাধীন হবে।”

৬. স্ত্রীর মনস্তত্ত্ব বোঝা: মহানবীর (সা.) আদর্শ

নবী মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন স্ত্রীদের প্রতি অত্যন্ত কোমল, সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাশীল। তিনি কখনও স্ত্রীদের ওপর জোর করেননি, বরং তাঁদের মতামত নিতেন, আবেগ বুঝতেন এবং কোনো বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতেন।

উদাহরণস্বরূপ:

উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বহুবার পরামর্শ দিয়েছেন, যা নবী (সা.) গ্রহণ করেছেন। নবীজি কখনো স্ত্রীদের মতামতকে অবজ্ঞা করেননি।

৭. দাম্পত্য জীবনে নবী (সা.)-এর আচরণ

নবীজি স্ত্রীদের কাপড় সেলাই করতেন, গৃহস্থালির কাজে সাহায্য করতেন এবং তাদের মন রক্ষায় অল্প কথা বলতেন। তাঁর দাম্পত্য জীবন ছিল নিখুঁত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক।

“আমি ঘরের কাজ করি, আমার স্ত্রীদের সহায়তা করি।”

(আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের বর্ণনা)

৮. স্ত্রীর ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিভঙ্গি

নারী-পুরুষ উভয়েই মানুষ। উভয়েরই ভুল হতে পারে। ইসলামে স্বামীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন স্ত্রীর প্রতি ধৈর্য ধারণ করেন।

“ধর্মে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যে তার স্ত্রীর ভুলত্রুটিকে ক্ষমা করতে পারে।”

 

উপসংহার

ইসলামে স্ত্রীর মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ এবং মহান। একজন স্বামী যদি ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলেন, তবে তিনি স্ত্রীকে কেবল একজন সহচরী হিসেবে নয়, একজন সম্মানিত ও পূর্ণ মানবিক সত্তা হিসেবে বিবেচনা করবেন। তার প্রতি দায়িত্ব পালন, ভালোবাসা ও সদাচরণ দাম্পত্য জীবনকে করবে সুসংহত, শান্তিপূর্ণ ও আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ।

একজন আদর্শ মুসলিম স্বামী হবেন এমন, যিনি কেবল বাহ্যিক সফলতা নয়, বরং পারিবারিক জীবনে স্ত্রীর প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকারকে অগ্রাধিকার দেবেন।

সংসার জীবনে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের গুরুত্ব

অধ্যায় ৩: সংসার জীবনে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের গুরুত্ব

ভূমিকা

বিয়ে একটি সম্পর্ক, যেখানে দুটি ভিন্ন ব্যক্তি একই জীবনের পথে হাঁটার জন্য একসঙ্গে হন। এই পথচলায় ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, সহানুভূতি ও বোঝাপড়া যেমন অপরিহার্য, ঠিক তেমনি ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ’ হল সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিগুলোর একটি। অনেকেই মনে করেন ভালোবাসা থাকলেই সম্পর্ক টিকে থাকে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ভালোবাসার চেয়েও অনেক বেশি প্রয়োজন শ্রদ্ধা। কারণ শ্রদ্ধা ছাড়া ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যদি পারস্পরিক সম্মান না থাকে, তবে দাম্পত্য জীবন ধীরে ধীরে বিষিয়ে ওঠে। তাই সংসারকে শান্তিপূর্ণ ও দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে, উভয় পক্ষকে একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে শিখতে হবে। এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে, কেন শ্রদ্ধাবোধ একটি বৈবাহিক সম্পর্কের মৌলিক ভিত্তি এবং কিভাবে তা জীবনে প্রভাব ফেলে।

১. শ্রদ্ধা মানে কী?

শ্রদ্ধা কেবল বাহ্যিক আচরণ নয়, এটি একটি মানসিক অবস্থান। এটি হল:

অন্যের মতামত ও চিন্তাধারাকে সম্মান করা

সীমারেখা মেনে চলা

একজন ব্যক্তিকে তার অবস্থান, ভূমিকা ও ব্যক্তিত্বের ভিত্তিতে মর্যাদা দেওয়া

স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে শ্রদ্ধা মানে:

একে অপরকে ছোট না করা, গালমন্দ বা কটাক্ষ না করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরামর্শ নেওয়া, ব্যক্তিগত পরিসরে স্বাধীনতা রক্ষা করা

২. শ্রদ্ধাবোধের অভাব: সম্পর্ক ভাঙনের গোপন কারণ

অনেক সম্পর্ক বাইরের দিক থেকে ভালোবাসায় ভরপুর মনে হলেও, ভিতরে ভিতরে শ্রদ্ধাবোধের অভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। নিচে এমন কিছু লক্ষণ দেওয়া হলো, যা বোঝায় দাম্পত্য জীবনে শ্রদ্ধার অভাব:

একজনের সিদ্ধান্ত অপরজন নাকচ করে দেয়, কথা বলার সময় অপমানমূলক ভঙ্গি,  ব্যক্তিগত সীমার অগ্রাহ্যতা, মতামত চাপিয়ে দেওয়া

সঙ্গীর সফলতাকে খাটো করে দেখা, এই আচরণগুলো ধীরে ধীরে একটি সুন্দর সম্পর্ককে অবমাননা, বিষাদ এবং মানসিক দূরত্বে পরিণত করে।

৩. শ্রদ্ধার মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে যা অর্জিত হয়

ক. বিশ্বাসের বুনিয়াদ গড়ে ওঠে

যেখানে শ্রদ্ধা থাকে, সেখানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস গড়ে ওঠে। এই বিশ্বাস শুধু দাম্পত্য নয়, সন্তান লালন-পালন এবং সামাজিক অবস্থানকেও দৃঢ় করে।

খ. মতপার্থক্যেও সৌহার্দ্য বজায় থাকে

 

শ্রদ্ধাশীল দম্পতিরা কখনও একমত না হলেও একে অপরের মতামতকে সম্মান করেন, যা ঝগড়া এড়িয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সুযোগ তৈরি করে।

গ. আবেগিক নিরাপত্তা তৈরি হয়

যখন একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে শ্রদ্ধা পান, তখন তিনি মানসিকভাবে নিরাপদ অনুভব করেন। স্বামীও স্ত্রীর শ্রদ্ধা পেলে আত্মবিশ্বাসী হন।

ঘ. সন্তানদের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ

শ্রদ্ধাশীল দাম্পত্য সম্পর্ক সন্তানদের মধ্যে সুস্থ পারিবারিক মূল্যবোধ তৈরি করে। তারা শিখে কীভাবে মানুষকে সম্মান করতে হয়।

৪. কীভাবে শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলবেন?

ক. মনোযোগ দিয়ে শুনুন

স্বামী বা স্ত্রী যখন কিছু বলেন, তখন তাঁর কথায় গুরুত্ব দিয়ে শোনা শ্রদ্ধার প্রথম ধাপ।

খ. প্রকাশ্যে অপমান নয়

পরিবার, বন্ধু বা আত্মীয়দের সামনে একে অপরকে ছোট করা এক বড় শ্রদ্ধাহীন আচরণ। কখনোই এটি করা উচিত নয়।

গ. মতামতের গুরুত্ব দিন

একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে স্ত্রী বা স্বামীর মতামত নিন এবং তা বিবেচনা করুন।

ঘ. ব্যক্তিগত সময় এবং পরিসরকে সম্মান করুন

একজন মানুষ হিসেবে প্রতিটি ব্যক্তির কিছু নিজস্ব সময়, শখ, বা কাজের ধরন থাকে। তা মেনে চলা উচিত।

ঙ. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন

 

সঙ্গীর ছোট কাজগুলোকেও গুরুত্ব দিন এবং ধন্যবাদ জানান। এই অভ্যাস শ্রদ্ধাবোধকে দৃঢ় করে।

৫. ইসলাম ও শ্রদ্ধাবোধ: একটি নৈতিক শিক্ষা

 

ইসলামে স্ত্রী ও স্বামীর একে অপরের প্রতি সদাচরণ এবং সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তারা (স্বামী-স্ত্রী) একে অপরের জন্য পোশাকস্বরূপ।”

(সূরা আল-বাকারা, ২:১৮৭)

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, পোশাক যেমন শরীরকে আবৃত করে, রক্ষা করে ও সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিকভাবে সম্মান ও সুরক্ষা প্রদান করেন।

রাসূল (সা.) এর দৃষ্টান্ত:

নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর স্ত্রীদের প্রতি এতই শ্রদ্ধাশীল ছিলেন যে, তিনি তাঁদের পরামর্শ গ্রহণ করতেন, কখনো জোর করতেন না, বরং ভালোবাসা ও সম্মানের মাধ্যমে সম্পর্ক পরিচালনা করতেন।

৬. বাস্তব উদাহরণ: শ্রদ্ধা কেমন হতে পারে?

ক. স্ত্রী যখন উপার্জন করে

অনেক পুরুষ এই বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু শ্রদ্ধাশীল স্বামী স্ত্রীর পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দেন এবং তাকে মানসিক সমর্থন দেন।

খ. স্বামী যখন ব্যর্থ হন

 

একজন শ্রদ্ধাশীল স্ত্রী স্বামীর কষ্টকে তুচ্ছ না করে তার পাশে দাঁড়ান এবং তাকে উৎসাহ দেন।

৭. শ্রদ্ধার অভাবে যা ঘটে

সম্পর্কের মধ্যে বিষাক্ততা তৈরি হয়

মানসিক নির্যাতন শুরু হয়

আত্মসম্মান নষ্ট হয়

তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বাড়ে

সন্তানের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে

শ্রদ্ধার অভাব দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্কবিচ্ছেদের মূল কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৮. শ্রদ্ধাবোধ চর্চার কিছু কার্যকর কৌশল

প্রতিদিন অন্তত একটি ইতিবাচক কথা বলুন

অন্যের অনুভূতির জায়গা বুঝুন

নিজেদের মাঝে সাপ্তাহিক ‘চিকিৎসামূলক আলাপ’ চালু করুন

একসঙ্গে বই পড়ুন বা ইসলামিক আলোচনায় অংশ নিন

প্রশংসা করতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না

উপসংহার

সংসার হলো দুটি মানুষের যৌথ জীবন যাপন, যেখানে ‘শ্রদ্ধা’ হলো সেই সম্পর্কের আত্মা। ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ ও সহযোগিতা তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা শ্রদ্ধার ছায়ায় লালিত হয়। শ্রদ্ধাবোধ ছাড়া কোনো দাম্পত্য জীবন সুখের হতে পারে না। বরং এই অভাব একসময় গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্ককে ধ্বংস করে দিতে পারে।

স্ত্রীর মানসিক ও আবেগিক চাহিদা

নিচে “স্ত্রীর মানসিক ও আবেগিক চাহিদা” শিরোনামে ৩০,০০০ শব্দের পূর্ণাঙ্গ বাংলা আর্টিকেলের চতুর্থ পর্ব হিসেবে প্রায় ২০০০+ শব্দে একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা দেওয়া হলো:

অধ্যায় ৪: স্ত্রীর মানসিক ও আবেগিক চাহিদা

ভূমিকা

একটি সফল, স্থায়ী এবং সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আবেগিক সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক স্বামী অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালনে যতটা সচেতন, মানসিক বা আবেগিক দিক থেকে স্ত্রীর চাহিদা পূরণে ততটাই অনিচ্ছুক বা অজ্ঞান থাকেন। অথচ একজন নারীর সবচেয়ে বড় প্রয়োজনগুলোর একটি হলো—মানসিক প্রশান্তি ও আবেগিক নিরাপত্তা।

এই অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব, একটি স্ত্রী কী ধরনের মানসিক ও আবেগিক চাহিদা অনুভব করে, কেন তা গুরুত্বপূর্ণ, এবং স্বামী কীভাবে সেগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে দাম্পত্য জীবনকে আরও দৃঢ় ও শান্তিময় করে তুলতে পারেন।

১. স্ত্রী শুধু একজন দায়িত্ব নয়, একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ

বিয়ের পরে অনেক পুরুষ স্ত্রীকে শুধুমাত্র ঘরের কাজ বা সন্তান পালনের দায়িত্বে নিয়োজিত একজন মানুষ হিসেবে দেখে থাকেন। অথচ একজন নারীও একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তি—যার অনুভূতি আছে, ভালোবাসার প্রয়োজন আছে, নিরাপত্তার চাহিদা আছে, আছে নিজের স্বপ্ন, মতামত, আবেগ ও সৃষ্টিশীলতা।

 

যখন এই দিকগুলো অবহেলিত হয়, তখন স্ত্রী মানসিকভাবে একা হয়ে পড়ে—even যদি সে শারীরিকভাবে সংসারে উপস্থিত থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মানসিক বিচ্ছিন্নতা দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব সৃষ্টি করে।

২. স্ত্রীর সাধারণ মানসিক ও আবেগিক চাহিদাসমূহ

ক. ভালোবাসার প্রকাশ

নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি আবেগপ্রবণ এবং ভালোবাসা প্রকাশকে মূল্যায়ন করে। স্ত্রী চায়, স্বামী যেন তাকে বুঝতে চেষ্টা করে এবং মাঝে মাঝে সরাসরি বলে—”আমি তোমায় ভালোবাসি।” এটি কেবল একটি শব্দ নয়, বরং তার মানসিক শক্তির উৎস হয়ে দাঁড়ায়।

খ. স্বীকৃতি ও প্রশংসা

প্রতিদিনের ঘরের কাজ, সন্তান দেখা, পরিবারের দেখাশোনা—এসব অনেক সময়ই অবহেলিত থাকে। স্বামীর একটি ছোট প্রশংসা (“তুমি অনেক কষ্ট করো”, “আজ খুব ভালো রান্না করেছো”) স্ত্রীকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে।

গ. মানসিক সমর্থন

সংসারের ঝামেলা, সামাজিক চাপ, শারীরিক ক্লান্তি, সন্তান পালন—সবকিছুর মাঝে একজন নারী চায় স্বামীর কাঁধে মাথা রেখে কিছু সময় কাটাতে। কেবল টাকা-পয়সা নয়, এক কাপ চা বা সময় দিয়ে পাশে থাকা তার মানসিকভাবে বড় সাপোর্ট হতে পারে।

ঘ. শুনে নেওয়ার someone

নারীদের একটি মৌলিক চাহিদা হলো—তাদের কথা শোনা হোক। তারা চায় কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনুক, বিরক্ত না হয়ে। অনেক সময় স্বামী যদি মনোযোগ না দেন, স্ত্রী নিজেকে অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শুরু করেন।

ঙ. নিরাপত্তা

শুধু শারীরিক নয়, একজন স্ত্রী মানসিক নিরাপত্তাও খোঁজে। সে চায়, তার স্বামী তার পাশে থাকবেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে মূল্যায়ন করবেন এবং তাকে সম্মান করবেন।

৩. স্ত্রীর আবেগিক চাহিদার প্রতি উদাসীনতা: ফলাফল কী?

 

অসন্তোষ: যদি একজন স্ত্রী মানসিকভাবে পরিপূর্ণতা না পায়, তাহলে সে একধরনের দুঃখবোধে আক্রান্ত হয়।

 

দূরত্ব: আবেগিক সংযোগ না থাকলে দাম্পত্য জীবনে ফাঁক তৈরি হয়।

 

আত্মবিশ্বাস হ্রাস: স্বামীর কাছ থেকে প্রশংসা ও স্বীকৃতি না পেলে স্ত্রীর আত্মবিশ্বাস কমে যায়।

 

ঝগড়া ও ভুল বোঝাবুঝি বৃদ্ধি: কথার চেয়ে “অনুভব না করার” কারণে মনোমালিন্য তৈরি হয়।

 

তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ: মানসিক শূন্যতা অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত সম্পর্ক বা নৈতিক দুর্বলতা ডেকে আনতে পারে।

 

৪. আবেগিক সংযোগ তৈরি করার কৌশল

ক. সময় দিন

 

ব্যস্ততার অজুহাতে দাম্পত্য জীবনে অবহেলা বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত ২০–৩০ মিনিট নিরিবিলি একান্তে সময় দিন।

খ. মনোযোগ দিয়ে শুনুন

 

কথা বলার সময় মোবাইল বা টিভিতে মন না দিয়ে স্ত্রীর চোখে চোখ রেখে শুনুন।

গ. মাঝে মাঝে ছোট উপহার বা চমক দিন

 

ছোট একটি ফুল, প্রিয় খাবার বা একটি মেসেজ অনেক বড় আবেগিক প্রভাব ফেলে।

ঘ. শারীরিক সান্নিধ্যের গুরুত্ব বুঝুন

 

আলতো করে হাত ধরা, কাঁধে হাত রাখা, জড়িয়ে ধরা—এসব স্পর্শ শুধু শারীরিক নয়, মানসিক আশ্রয়ের অভিব্যক্তি।

ঙ. মতামত নিন ও গুরুত্ব দিন

 

যেকোনো পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিন। এতে সে সম্মানিত অনুভব করে।

৫. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ: স্ত্রীর মনের খোঁজ নেওয়া ফরজ দায়িত্ব

 

রাসূল (সা.) ছিলেন স্ত্রীর আবেগিক চাহিদা পূরণে সর্বোত্তম উদাহরণ। তিনি শুধুমাত্র স্ত্রীদের খাওয়া-দাওয়া বা পোশাকের দায়িত্ব নেননি, বরং তাঁদের অনুভূতিকে বোঝার চেষ্টা করতেন।

নবীজির দৃষ্টান্ত:

 

তিনি স্ত্রীদের গল্প শুনতেন

 

হযরত আয়েশা (রা.)-র সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন

 

তাঁদের খেয়াল রাখতেন এমনকি মেজাজ খারাপ থাকলেও

 

“মুমিনদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণ করে।”

(তিরমিযি)

 

৬. মানসিক নির্যাতন: এক নীরব ব্যাধি

marriage media
বিয়ের পর সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত 2025

অনেক সময় স্বামী নিজে বুঝতে না পারলেও তার কিছু আচরণ স্ত্রীকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তোলে:

অবহেলা করা

বারবার ভুল ধরিয়ে অপমান করা

স্ত্রীকে তুচ্ছজ্ঞান করা

তুলনামূলক মন্তব্য করা (“ফলানার বউ কেমন সুন্দর রান্না করে”)

স্ত্রীর অনুভূতি নিয়ে হাসাহাসি করা

এসব আচরণ স্ত্রীর আত্মসম্মানে আঘাত করে এবং দাম্পত্য সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তোলে।

৭. কীভাবে বুঝবেন, স্ত্রী মানসিকভাবে অসন্তুষ্ট?

তিনি মনমরা থাকেন, কথা বলেন কম, কোনো বিষয়েই আগ্রহ দেখান না, হঠাৎ রেগে যান বা কাঁদেন, নিজের উপর খেয়াল রাখা বন্ধ করে দেন, সবকিছুতেই ক্লান্তি ও বিরক্তি প্রকাশ করেন

এই লক্ষণগুলো দেখে স্বামীদের উচিত, স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করা—“তুমি কেমন আছো?”—এবং মনোযোগ দিয়ে শুনে বুঝে নেওয়া, তার ভিতরে কী চলছে।

৮. স্ত্রীর আবেগিক চাহিদা পূরণে সচেতন স্বামীর গুণাবলি

ধৈর্যশীল, সহানুভূতিশীল, পর্যবেক্ষণক্ষম, আন্তরিক,  প্রকাশে বিশ্বাসী, কথার চেয়ে কাজে বেশি অনুভব করাতে পারেন

উপসংহার

একজন নারী শুধুমাত্র ভরণপোষণ বা উপহারেই পরিপূর্ণ হন না। তিনি মন দিয়ে অনুভব করতে চান যে, তিনি তাঁর স্বামীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ, ভালোবাসার যোগ্য, এবং সম্মানের অধিকারী। স্ত্রীর মানসিক ও আবেগিক চাহিদা যদি স্বামী পূরণ করতে পারেন, তাহলে তাঁদের সংসার শুধু বাহ্যিকভাবে নয়, আত্মিকভাবে মজবুত হয়।

 

একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য স্বামীকে স্ত্রীকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে—তার না বলা কথাগুলো, চোখের ভাষা, নিঃশব্দ কষ্ট—সবকিছু। আর এটাই একজন আদর্শ স্বামীর মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।

 

 

 

 

 

Post Views: 203

Tags:

Banani matrimonial serviceMarriage bureau in Bananiবনানী বিয়ে করার ঠিকানাবনানী বিয়ের অফিসবনানী বিয়ের সম্বন্ধবনানী ম্যারেজ মিডিয়া

Share Article

Follow Me Written By

Gulshan Media

Other Articles

Why We’re the No. 1 Marriage Media in Bushundhara.
Previous

প্রেমে পড়া আর বিয়ের জন্য উপযুক্ত হওয়া—এদের মধ্যে পার্থক্য কী?2025

গুলশান-বনানীতে অনলাইনে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হলে কী কী জানা দরকার?2025
Next

গুলশান-বনানীতে অনলাইনে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হলে কী কী জানা দরকার?2025

Next
গুলশান-বনানীতে অনলাইনে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হলে কী কী জানা দরকার?2025
June 29, 2025

গুলশান-বনানীতে অনলাইনে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হলে কী কী জানা দরকার?2025

Previous
June 27, 2025

প্রেমে পড়া আর বিয়ের জন্য উপযুক্ত হওয়া—এদের মধ্যে পার্থক্য কী?2025

Why We’re the No. 1 Marriage Media in Bushundhara.

No Comment! Be the first one.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Posts

  • The Best Matrimonial Services in Bangladesh: Finding Your Perfect Match
  • What is the marriage rate in Bangladesh
  • Discover Second Marriage Girl Profiles with Mobile Numbers
  • How This Platform Helps You Find Your Life Partner
  •  Cross-Cultural Marriages: How Gulshan Media Bridges Families Across Borders

Archives

  • October 2025
  • September 2025
  • August 2025
  • July 2025
  • June 2025
  • May 2025
  • March 2025
  • February 2025
  • January 2025
  • December 2024
  • November 2024
  • October 2024
  • September 2024
  • August 2024
  • July 2024
  • June 2024
  • May 2024
  • April 2024
  • March 2024
  • February 2024
  • January 2024
  • December 2023
  • November 2023
  • October 2023
  • September 2023
  • August 2023
  • July 2023
  • June 2023
  • May 2023

Categories

  • Article
  • Bangladeshi Matrimony
  • Bride Available
  • Citizen Bride Available
  • Citizen Groom Available
  • Groom Available
  • Health
  • Islamic Matrimony
  • life partner
  • Life Style
  • Marriage Media
  • Matrimonial
  • Matrimony
  • Online Ghotok
  • Online Matrimony
  • Online-offline matrimony
  • Uncategorized
  • Wedding Tips

Address

Head Office: Dhanmondi, Dhaka-1207, Bangladesh.

Branch Office: Rajuk Trade Center, Nikunja-2, Khilkheet, Dhaka-1229, Bangladesh.

Branch Office: BTI Premier Shopping Mall, North Badda, Gulshan, Dhaka-1212, Bangladesh.

Contact

Mobile: +8801779940833

Call: 01779940833 (Whatsapp)

gmm-call-mobile
Gulshan Media Blog

Gulshan Media is the Bangladeshi oldest and most successful Matrimony / Matrimonial / Marriagemedia / Matchmaking service, has been trusted since 2005.


© 2025, All Rights Reserved.

Quick Links

  • Home
  • Blog
  • About
  • Contact
  • Premium Plans
  • Search Members
  • Free Registration

Category

  • Bangladeshi Matrimony
  • Islamic Matrimony
  • Marriage Media
  • Matrimonial
  • Matrimony
  • Online Ghotok
  • Online Matrimony

Follow Us

Facebook
01779940833 (Whatsapp)

Design By Badhon IT

  • Home
  • Blog
  • Features
    • Bangladeshi Matrimony
    • Islamic Matrimony
    • Marriage Media
    • Matrimonial
    • Matrimony
    • Online Ghotok
    • Online Matrimony
    • Online-offline matrimony
    • Wedding Tips
  • Seeking Bride/Groom
    • Bride Available
    • Citizen Bride Available
    • Groom Available
    • Citizen Groom Available
  • Health
  • Life Style
  • About
  • Contact